সাপ্তাহিক কবিতা সমগ্র ৩

সাপ্তাহিক কবিতা সমগ্র ৩ এর কবিতা পড়বো কিভাবে?

সাপ্তাহিক কবিতা সমগ্র ৩ এর কবিতাগুলো পড়ার জন্য সূচিপত্রে লেখা কবির নাম অথবা কবির কবিতার উপর ক্লিক করুন। দেখবেন কবিতা আপনার স্ক্রিনে চলে এসেছে
কবিতা সমগ্র ১
সাপ্তাহিক কবিতা সমগ্র ২

সাপ্তাহিক কবিতা সমগ্র ৩

অন্যবাংলায় আজকে সাপ্তাহিক কবিতা সমগ্র ৩ এ প্রকাশিত হলো ১২ জন কবির সাপ্তাহিক কবিতা সমগ্র ৩ শিরোনামে ১৬ টি চমৎকার কবিতা। আপনারা এই সাপ্তাহিক কবিতা সমগ্র ৩ এর কবিতাগুলো পড়ুন ও আপনাদের মতামত জানান।

কবিতা সমগ্র ৩
কবিতা সমগ্র ৩

সুশান্ত সেন

সময়

সময় টা পাথরের মত বুকের ওপর চেপে বসে জড়িয়ে ধরেছে ।
একটুও নড়াচড়া করার উপায় নেই।
অজগর জড়িয়ে ধরার পর
হরিণ টা যেমন ক্রমশ নেতিয়ে আসে,
যেমন ভাবে ধীরে অথচ অমোঘ
সেই রকম এক চেতনাহীন অবস্থা।
চিরাগ টা ঘষে ফেলেছি
জিন ত বোতল থেকে বেরিয়ে এসেছে
দুষ্টু জিন
বেরিয়েই পেছনে পেছনে ধাওয়া করেছে,
মান বাঁচাতে আমি ছুটছি আর ছুটছি
কোনো দিশা খুঁজে পাই না
দম ত বন্ধ হয়ে আসছে ।

জীবন

কত বার ত বারণ করা হল
পরের চরকায় তেল না দিতে,
আশে পাশে চরকার খোঁজে
ব্যয় হল অনেকটা সময়
তেল ও কেনা হল, দাম বাড়তে থাকলেও।

ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর
লোকের ত অভাব নেই ।
তাই কোনো কথাই কেউ শুনলো না।
সবাই এ ওর চরকায় তেল দিতে থাকলো।

অনর্থক জীবনের অমূল্য সময় নস্ট করে
শেষে অনুতাপ ।
এই ভাবেই জীবনটা চলে যাচ্ছে —
যা বোঝবার আপনি বুঝে নিন , মহাশয় ।

তারক নাথ সাহা

এখন বয়স 63 । 12 বছর বয়সে স্কুল ম্যাগাজিনে প্রথমলেখা ও প্রকাশ । কলেজ শুভনিয়ারে দ্বিতীয় লেখা প্রকাশ । কলেজ মাসিক ওয়াল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করি 2 বছর । আন্দুল স্টেশন ওয়াল ম্যাগাজিনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলাম । 15 জন সদস্য বিশিষ্ট বলাকা সাহিত্য সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে প্রতি মাসে সাহিত্যের আড্ডা বসাতাম বাড়িতে । কয়েক মাস পর ‘সাম্য’ মাসিক পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদনা করি 3 বছর । সে সময় অনেক স্বরচিত কবিতা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার পেয়েছি , অনেক লিটিল ম্যাগাজিনে নিয়মিত লেখা প্রকাশিত হত ।

কর্মজীবন শুরু হবার পর এসবই বন্ধ হয়ে যায় । মাঝে মধ্যে নিজের খুশিতে লিখতাম । অবসরের পর আত্মীয় বন্ধুদের উৎসাহে আবার সাহিত্য চর্চায় মন দিই । গত 2 বছরে কবিতা , ছড়া , অনুগল্প ও প্রবন্ধ মিলিয়ে প্রায় 30 টি রচনা প্রকাশিত হয়েছে । তার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে 2টি কলকাতা বইমেলা 2023 শে 3টি ।
ইদানীং শিশুদের জন্য লেখার ইচ্ছেটা বাড়ছে । তার মধ্যে 2022 থেকে ‘খবর সাকরাইল’ মসিক পত্রিকাতে সাংবাদিকতা শুরু করি । বর্তমানে ঐ পত্রিকার সহ সম্পাদক । বাকি জীবন সাহিত্যচর্চা নিয়েই কাটিয়ে দেবো ।

হিং-টিং-ছট্

কোকিলার মত কুহু কুহু রবে
কুকুর যদিবা হাঁকে ,
হাম্বা হাম্বা চিৎকার করি
শেয়াল যদিবা ডাকে ।

ফড়িংয়ের রানী রোজ জাল বুনি
মাঁকড় ধরিয়া খায় ,
পায়ে হেঁটে সাপ প্রভাত চলনে
বাজারেতে যদি যায় ।

উকিলবাবুরা স্টেথো হাতে নিয়ে
রোগী দেখাশুনো করে ,
টোপর মাথায় বিয়ের কনেরা
সিঁদুর লাগায় বরে ।

জল দিয়ে ভাজে ফুলো ফুলো লুচি
বাদুড়ের মত গাছে দোলে মাছি ,
হিং-টিং-ছট্ স্বপ্নের জালে
সিংহ বাঘেরা ফুলবল খেলে ।

সুমিতা চৌধুরী

আমি, লেখিকা সুমিতা চৌধুরী। পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার সালকিয়ায় জন্ম এবং বড়ো হওয়া। অধুনা বাস হাওড়ার লিলুয়ায়। ছেলেবেলা থেকেই বাবা জেঠুদের সান্নিধ্যে এবং অনুপ্রেরণায় লেখার প্রতি অনুরাগ ও লেখায় হাতেখড়ি। পরবর্তীতে স্বামী প্রয়াত শ্রী বুলবুল চৌধুরীর উৎসাহে ও অনুপ্রেরণায় সাহিত্য জগতে প্রবেশ। অধুনা বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় আমার লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হয়। সম্প্রতি আমার একক কাব্যগ্রন্থ “রৌদ্র- ছায়া” সগর্বে প্রকাশিত হয়েছে।

তামাদির দর

তথাকথিত তোমাদের মুন্সিয়ানার দুনিয়ায়
বড়োই বেমানান আমি,
বুদ্ধিমত্তায় বিচার করে চলায় বড়োই অদক্ষ।
যখন মন খুশি হয়, তখন প্রাণভরে হাসি,
মাপি না তার ব্যাপ্তি।

See also  সুমিত মুখার্জীর গল্প অতৃপ্ত আত্মার কাহিনী

তেমনি মনের আকাশে মেঘ জমলে,
ঝোলাতে পারি না কৃত্রিম মাপা হাসি ঠোঁটে।
বরং কখন যেন সেই মেঘ অচিরেই বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে,
স্থান কাল পাত্র না বুঝেই।
হ্যাঁ, তোমাদের বুদ্ধিমত্তার চৌহুদ্দিতে বড়োই বোকা আমি,
মনের সরল বিশ্বাসে সহজেই বাড়িয়ে দিই বন্ধুত্বের হাত,
এই কপট ছলনাময় দুনিয়ায় তাই ঠকতে হয় বারবার,
তবু বিশ্বাসকেই আঁকড়ে ধরি।

কিছুতেই দিতে পারি না এতোটুক স্থান অবিশ্বাসকে, আপন হৃদয়ে।
হ্যাঁ, তোমাদের সচল দুনিয়ায় আমি আজ তামাদি, অচল পয়সা সম,
হয়তো তোমাদের মতো বুদ্ধিজীবীদের কাছে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের হাসির খোরাক সম।
তবু, আমার মনের দরবারে আজও আমি অমলিন, খাঁটি।
জানো তো, বহুকাল যাবতই, আজ যারা অচল, হয়েছে অতীত, তামাদি,
তারা তোমাদের নিলামের বাজারে বিকোয় বহুমূল্যে।
তোমরাই খরিদ করো স্বেচ্ছায় তাদের, যত্ন করে সাজাবার সামগ্রী রূপে, গর্ব ভরে।
আসলে তোমাদের ঐ মেকি দুনিয়ায়, আজও কদর কিন্তু ঐ খাঁটিদেরই,
কিন্তু, ঠকা ঠকানোর দাসত্বে তোমরা আজ পুতুল সম!

প্রতিনিয়ত নিজেরা নিজেদেরই ঠকানোর নেশায় মেতে, মানবিকতার চৌহুদ্দিতে করছো নিলাম নিজেদেরই!
একবার মন দর্পণে প্রশ্ন করে দেখো,
তোমাদের চালাকির দুনিয়ায় কে বুদ্ধিধর তুমি, না আমি?
একবার মনুষ্যত্বের জমিতে দাঁড়িয়ে দেখো,
তোমাদের বাস্তবিকতার নিরিখে কে খাঁটি , তুমি, না আমি?
তাই বলি, একবার মন খুলে হেসে দেখো,
দুনিয়াটা আজও কতো সুন্দর, খাঁটি।

একবার উপচাতে দাও মনের মাঝে জমা দুঃখ যতো,
ঝরে পড়ুক স্থান- কালের সীমারেখার বাইরে অঝোর ধারায়,
দেখবে সেই অশ্রুফোঁটার প্রতিটি কণা কতো স্বচ্ছ,
যার মাঝে এই পৃথিবীকে দেখায় ঠিক স্ফটিকের মতো।
একবার বিচারের মাপকাঠির বাইরে, মনের বিশ্বাসে বাড়াও হাত বন্ধুত্বের,
দেখবে যদি বা ঠকো দু- একবার,
তবু মিলবেই বন্ধু, আজীবনের হৃদয়ের অভিন্নতায়, রেখো এই আশ্বাস।

দেখবে এই পৃথিবীতে কতো আলো, কতো ফুল, পাখির সমাহার,
কতো গান, আপন ছন্দ লয়ে রচছে আপন মননশীলতায়, নব নব সৃষ্টিকে,
দেখবে মেকি কপটতার জাল ভেদ করে নতুন আলোকোজ্বল এক সুন্দর পৃথিবীকে।।

পরমেশ্বর গাইন

পরমেশ্বর গাইন। পিতা – দর্পন গাইন। মাতা- বিমলা গাইন। জন্ম ৩/৫/১৯৬৯। প্রকাশিত কাবিতার বই সবুজ গালিচা, দূর দিগন্ত রেখায়, গল্পে গল্পে, ঝিনুকের কথা। অনেক পুরস্কার অর্জন করেছি। তবে কবি পরিচিত কানে বাজেনি এখনো

অচল আধূলি

চলো ফিরে যাই……
যতো দূর যাওয়া যায়
ছোট ছোট পায়ে হাটার পথ
হয়তো মুছে গেছে সরলতায়।

দূরের মসৃণ রাস্তায় কুয়াশা
বাকি পথে পাথর বিছানো
বিপদের হামাগুড়ি
যন্ত্রণার গালিচায় নিত্য হুড়োহুড়ি।

এখানে আমরা বেমানান
বেসুরো সঙ্গীতের আবাহনে
রেখেছি সততার নিত্য মৃত্যুবান
অসংযমে অবাঞ্ছিত কলতান।

চারিদিকে সাদা তুষারের মত
সত্য ছড়ানো শান্তি লতার
বিনয় মেশানো মানবিকতায়
জড়িয়ে আছি কালো গুল্ম লতায়।

স্বচ্ছতার অভিবাদন নগর জীবনে
ধেয়ে আসছে ভগীরথের গঙ্গায়
মাঝখানে কুণ্ডলীকার নুড়িপাথর
ভেঙে যেতে পারে বালুকণায়।

চলো ফিরে যাই
ভাঙ্গা মেঘের পালকে ভেসে
বনের কোলে অবচেতনে
পূর্ব পুরুষের ছদ্মবেশে।

তপন মাইতি

নামঃ তপন মাইতি।গ্রামঃ পশ্চিম দেবীপুর।পোঃ দেবীপুর।থানাঃ মৈপীঠ কোস্টাল।জেলাঃ দঃ ২৪ পরগণা।পিন-৭৪৩৩৮৩। প্রত্যন্ত সুন্দরবনে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম।বাবাঃ দিন মজুর।মাঃ সংসার চালিকা।চেয়ে চিন্তে কোনরকমে ডিপ্লোমা পাশ।লেখালেখির চেয়ে পড়তে বেশি ভালো লাগে। প্রথম লেখা শুরু আমি তখন ক্লাস সিক্সে।দেশ বিদেশের লিটল ম্যাগাজিনে লেখালেখি করি। ভগবান ও সকল মানুষের ভালোবাসা ও আশির্বাদে ক্রমশ প্রকাশিত হবে আশা করি।

শান বাবু

জামাই সেজে দাঁত মুখ মেজে
যাচ্ছেন বাবু শান
বয়েস হয়েছে কলপ করেছে
মুখে জর্দা পান
টাকা করেছে মালিক হয়েছে
সুন্দরী বউ চান।

দেখতে কেমন ফুটবল যেমন
অনেক বেশি খান
তিরিশ বিঘা জমিন বিশাল দীঘা
একটু বড় কান
দোষটি বাজে একটা জিনিস কাজের
ফাটা গলায় গান।

বড় বাবু ছোট বাবু
গায়ে মাটির ঘ্রাণ
মোড়ের মাথায় বড়লোকীর ছাতায়
মাছটা বড় খান
এখন যিনি মন্ত্রী হবেন তিনি
আসন যদি পান।

জামাই সেজে রসিক কে যে!!!
বাজার করেন শান
ভাঙা গলা খাচ্ছেন আপেল কলা
বলছেন ওয়েল ডান
একা দাঁড়া পাশে মানুষ খাড়া
মুক্ত হস্তে দান।

পাড়ার সবাই ভালোবাসেন
রাখেন তিনি মান
স্কুল কলেজে যাওয়া অষ্টরম্ভা
বিলায় টোলার ধান
পড়াশোনা নেই তাতে কী হলো
রাখেন হুঁশ আর মান।

মিছিল করেন মিটিং করেন
যেন মানুষের জান
মানুষের দুঃখে তিনিও কাঁদেন
মানবতার টান
এসব দেখে কেউ কেউ জোটবদ্ধ হয়
কেউবা করেন ভান।

বিশ্বাস ভাঙে,প্রতিবাদ হয়
কেউবা করেন ফান
জল ঢালে বিক্ষুব্ধ মন লেলিহান
কু ঝুক্ ঝুকে যান
এসব দেখে চিরকুমার থেকে
হৃদয় ডাকে বান।

চুলটা ছেঁটে যাচ্ছেন হেঁটে
বড় বাবু শান
দুলকি চালে দুলে মুখটা ফুলে
যদি তিনি পান
দেখি শুনে মনটা ভেঙে খান খান
অনেক কিছুই চান।

See also  সাপ্তাহিক কবিতা সমগ্র ১

না হয় একবার

খুব সহজে ধরে নিতে পারো
খারাপ কিংবা অতি ভালো ছেলে
পছন্দ না বলতেই পারো হেসে
তাড়াহুড়োয় গেলে লোকাল মেলে।

স্ট্যাটাসে দাও ফেসবুকে দাও লিখে
ভাইরাল হচ্ছো পোস্টে কমেন্ট হাজার
না হয় একবার গেলে অনেক শিখে
বেড়ে গেল আগুন ফাগুন বাজার।

এমনি এমনি মানুষ কী আর বলে?
লোকের কথা সব কানে নিতে নেই
এর কথা ওর কাছে গাইলে হবে?
চাপের মুখে হারাতে পারো খেই!

অনেক মানুষ অনেক রকম বলবে?
ভালোটা যে আমরা নিতে পারি
পরের ঘাড়ে কাঁঠাল রাখলে চলবে?
এত দূর ঝুক্কি ঝামেলা ছাড়ি।

দোষের মধ্যে ভালবাসি আমি
না হয় একবার মনে করলে তুমি
বলতে পারি আজও শুভকামী
একবার এলে ধন্য হতো ভূমি।

খুব সহজে বলে দিতে পারো
একটু আধটু দূরে যেতে পারি
যেতে পারলে যেতে তুমি পারো
ভালবাসলে বলবে কেন ছাড়ি?

থাকতে পারে তোমার জারিজুরি
তোমার অঢেল জানি ভুরি ভুরি
ওসব কিছু চাই না বলে ছুঁড়ি
ভালবেসে বলে ফেলি বুড়ি!

বুড়ি সে যে বয়সের বুড়ি না
আমার কাছে কক্খনো বুড়ি নও
আদর যত্নের বৃক্ষ তুমি আমার
যথাসর্বস্ব আমার যদি হও।

খুব সহজে ডাকতে পারো আমায়
প্রেমিক ভাসে তেজদীপ্ত গামায়
শ্যামল হৃদয়ে নজরানা কামায়
বসন্তী রঙ প্রিয় তোমার জামায়

লাগল আগুন ফাগুন চাঁদের গায়ে
জ্বলে পুড়ে রোদে জলে ছারখার
যেমন রোদের আদর শিমুল গায়ে
তেমন কাছে এলে না হয় একবার….

ফাগুন ও আমরা

মেঘ ভেসে যায় কালো পেঁজা
আনন্দে মন শিশু রেজা
বলল কোথায় যাচ্ছ?
কেন দেখে হাসছ?
আমায় নিচ্ছ না!

ফুল ফুটেছে চামর সাদা
বৃষ্টি পড়লে রাস্তা কাদা
যাচ্ছ কোথায় নৌকায়?
খাচ্ছ কিসে চৌকায়?
আমায় দিচ্ছ না!

গান শোনাবে মেলা এলে
ঢাক বাজাবে গাঁয়ের কেলে
আমের মুকুল ঝরে
বাড়ি ছাওয়া খড়ে
নতুন জামায় দাগ!

অশোক শিমুল ঝরল ভোরে
পড়াশোনা কাড়ল চোরে
আমেজ ছুটির খুশি
মেনি বেড়াল পুষি
কাজল মেঘের রাগ!

মেঘ ভেসে যায় আকাশ পারে
মেঘ বালিকা যাস আয় নারে!
ভূতের গল্প চলে
দাদু গল্প বলে
ডাকে দাদুর নাক
মেঘ করেছে আকাশ জুড়ে
নিঝুম রাতে আসিস ঘুরে

যেখানে মেঘ সেথায়
বৃষ্টি,দুঃখ হেথায়
মা তুলেছে শাক।
ফাগুন এলে কোথায় যাবে?
ফুলের মতো জীবন পাবে।

কাজল মৈত্র

শ্মশান যাত্রা

আষাঢ় নিশ্চয় কেঁদে গেছে
বিবস্ত্র গাছের কাছে
রাত জাগা শব নিঃশব্দে হাই তোলে
একাকি শ্মশান চিতায় ,
ভালবাসার প্রতিনিয়ত সেতু
বুড়োটে সময়ের কাছে

একটু একটু করে ক্ষয়ে যায়,
উজ্জ্বল চাঁদের থেকে পেয়েছে যে আলো
থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে বিবর্ণ সিঁদুরের কাছে
নিজের মুখ পুড়িয়েছি আমি
বিবশ হাত দিয়ে
তবুও প্রতিনিয়ত গেয়ে চলেছি
শ্মশান যাত্রার পুরানো সংকীর্তন।

সুমিত মুখার্জী

তরুণ লেখক সুমিত মুখার্জী হুগলি জেলার শ্রীরামপুর শহরে ২০০২ সালের ১৮ই মঃ জন্মগ্রহণ করেন। ২০২০ সালে মাহেশ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক. পরীক্ষায় পাশ করে পরবর্তীকালে ২০২২ সালে রিষড়া হাই স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন এবং বর্তমানে হুগলি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি কলেজের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং র ছাএ পড়াশোনার পাশাপাশি তাঁর ভালো লাগার বিষয় হলো কবিতা লেখা,গল্প লেখা, অভিনয় করা ইত্যাদি।

রাজকন্যা

তুমি কি আমার অশ্রু ভেজা চোখের একটুখানি মায়া হবে ??
না হয়,
দিনের সব ক্লান্তিকে তালাক দিয়ে এক মুঠো শীতল দক্ষিণা বাতাস হবে ??
তুমি কি আমার নুয়ে পড়া চোখের একটু খানি নিদ্রা হবে?
না হয়,
একটা নির্ঘুম রাতে আমার চোখের এক চিলতে ঘুম হবে??
তুমি কি আমার মুখের একটু খানি হাসি হবে??

না নয়,
দিনের সব দুঃখকে ঝেড়ে ফেলে শান্তির এক পসলা বৃস্টি হবে??
তুমি কি আমার একটু দুষ্টুমির সাথী হবে??
না হয়,
দিনের শেষে আমার হাত ধরে আমার রাজ্যে খুশির মন ফড়িং হবে??
তুমি কি আমার একটুখানি ভালোবাসার আশ্রয় হবে??
না হয়,
সব কোলাহল ত্যাগ করে জনহীন কোন রাজ্যে একসাথে হাতধরে বুড়ো বুড়ি হবে??

কে দেব দাস

বসন্তের অপেক্ষায়

ছুটেযায় আঙ্গিনায় ভ্রমিয়ে,
শুনে তোমার পদধ্বনি।
একি হায়!
তোমায় যে হেরি না হেথায়!

তোমার চপল চরণধ্বনী,
বাজে মোর হৃদয় বীণায়।
আমি আনমনে বসে রই
তোমার অপেক্ষায়।

সম্ভিত ফিরে পায় যখন,
ফিরি তোমার অনুভূতি নিয়ে।
দিনযায়, রাতযায় —
আমি একা বসে নিরালায়।

তোমার আশে বসে রই,
বেলায় অবেলায়।
তুমি যে আসবে ফাগুনে,
রাঙ্গিয়ে দিতে মোরে,স্বপ্নেবিভোরে।

পলাশ ফুলের সুবাসে,
তোমায় পাবো পাশে, বসন্তের শেষে।
অপেক্ষার হবে অবসান, তোমার পরশে।

See also  চিত্তরঞ্জন দেবভূতি এর শীতের কবিতা

চূর্ণবিচূর্ণ হবে মানঅভিমান,
ঘূচিয়ে দুরত্বের ব্যবধান।
তোমার ছোঁয়াতে হবে খানখান,
ভূলে গিয়ে পূঞ্জিভূত মানঅভিমান।

শান্তিদাস

শান্তি দাস। এম এ (এডুকেশন)। বিষয় শিক্ষিকা (সরকারি বিদ্যালয়)। খোয়াই, জাম্বুরা, ত্রিপুরা।

ফাগুন এলো রে

প্রকৃতির খেয়ালে লালিমায় ভরে শিমুল পলাশ,
ঋতুরাজ বসন্ত এলো এলো প্রিয় ফাগুন এলো যে।
পলাশ প্রিয়া মাগো আমার বিদ্যেবতী মা!
এই অন্ধকার প্রাণের পরে জ্ঞানের শিখা দাও জ্বালিয়ে।

কিংশুক নাম তার বেশি পরিচিত পলাশে,
নির্গন্ধা ফুল হলেও অপরূপ সৌন্দর্যে ভাসে তার রূপ।
নিত্য পূজায় না লাগলেও সে যে মা সরস্বতীর বড় প্রিয়,
বিদ্যেবতীর পূজোয় হাতে পলাশ লাগে দারুণ সুন্দর।

পলাশের বৃক্ষ শাখায় কোকিল ধরে কুহু তান,
কত শত প্রস্ফুটিত ফুলের মধু খেয়ে গুঞ্জরণ করে।
হৃদয় মাঝে দীপ্তি জাগুক সুপ্ত প্রাণে তোমার আবাহনে,
ছন্দে সুরে রঙে গাঁদা পলাশ ফাগুনে ভরুক প্রকৃতিতে।

হৃদয় মাঝে মাগো স্পর্শে তোমার করুণা জাগাও প্রাণে,
তোমার আশীষ ধারা বয়ে যাক নিরন্তর শ্বাশত প্রেরণা।
ফাগুনের শুক্লপক্ষে সরস্বতী মায়ের চরণে নিবেদন,
মায়ের আরাধনায় আকুল মনে পলাশ প্রিয়া স্মরণে।

বসন্ত প্রিয়ারে ঘায়েল করেছো রূপের লাল আগুনের পরশ,
শিমুল পারুল বকুল পলাশের সনে ভরা বাহারী ফাগুন।
প্রেমের আগুনে দোল উৎসবে পলাশ প্রিয়া হবো,
লাল লাল হয়ে সিঁথি রাঙিয়ে তোমারই প্রেমে মাতিবো।

শর্মিষ্ঠা ঘোষ

জন্ম কলকাতায়। বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা ও লেখালেখি শখ। কবিতা প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন সাময়িক পত্রিকায়। দৈনন্দিন জীবনের যন্ত্রণা, প্রেম, পাল্টে যাওয়া রঙ লাগে কবিতায়।

জীবন মরণ সীমানা ছাড়ায়ে

পুড়ছো, অনেক দিন ধরে

চোঁয়া গন্ধ নেই
পোড়া দাগ নেই
ছাই নেই

কাঁদছো বহুকাল
মেঘ আছে
বৃষ্টি নেই

সরে যাচ্ছো
চলন নেই
গমন নেই
আগমন নেই

আছে জলের ঋণ
আচমন আছে
অপেক্ষা কিয়ৎকাল

অরবিন্দ সরকার

আমি অরবিন্দ সরকার, বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ,ভারত। অ থেকে হ পর্যন্ত অক্ষর দিয়ে আদ্যাক্ষর কবিতার স্রষ্টা কবি।তাছাড়া রম্যরচনা কবিতা গল্প ভ্রমণ কাহিনী লিখি। আমার এ পর্যন্ত ১২ খানা বই প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে একজন অবসরপ্রাপ্ত হাইস্কুলের শিক্ষক।

নদী মাতৃক বাংলাদেশ

সাত শত নদী ঘিরে, রয়েছে বাঙলা,
শাখা নদী, উপনদী যোগে আরো বেশি,
পদ্মা যমুনা মেঘনা রূপসা ধবলা,
নদ আছে ব্রহ্মপুত্র কপোতাক্ষ দেশী।

মধুমতী, বুড়িগঙ্গা তিস্তা কর্ণফুলী,
মাইনি ভদ্রা সুরমা ঘাঘট আত্রাই,
আড়িয়াল খাঁ , গোমতী ধানসিঁড়ি মালি,
করতোয়া, কংস চিত্রা দোনাই গড়াই।

কুশিয়ারা,পুনর্ভবা জলঢাকা নাফ্,
গুড়গুমানি ময়ূর শীতলক্ষ্যা কংস,
বড়াল তিতাস বংশী হালদা ত্বরাগ,
বেতনা ধনু হালদা, ডাকাতিয়া, অংশ।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের রক্তে নদী ভাসে,
ভারত সহযোগিতা স্বাধীনতা আসে।

স্বপ্নের বাংলাদেশ

নদ নদী দিয়ে ঘেরা সোনার বাঙলা,
বাঙালী জাতির রক্তে দাবি আন্দোলন,
বিনিময়ে স্বাধীনতা ভাষা প্রচলন,
শহীদের প্রাণ দানে শোভে বর্ণমালা।

পুরোনো শহর ঢাকা ধন্য রাজধানী,
রাজপথে রিক্সা চলে যন্ত্র যানে পাল্লা,
শ্রমজীবী মানুষের আয়ে ইনশাল্লা,
বহির্বিশ্বে ভাবমূর্তি সম্প্রীতির বাণী।

ধর্ম নিজ নিজ মনে উৎসব সবার,
ঈদুজ্বোহা দুর্গাপূজা বাঙালি পার্বন,
মিলে মিশে একাকার সংস্কৃতি বাহন,
সুখ-দুঃখে পাশাপাশি বদ্ধ অঙ্গীকার।

বাঙালীর ভাগাভাগি- স্বার্থান্বেষী জনে,
কাঁটার তারের বেড়া -দাঁড়িয়ে সামনে।

অভিজিৎ দত্ত

বসন্তকাল

ফাল্গুন-চৈত্র, দুই মাস বসন্ত
বসন্তকাল এলে পরে
প্রকৃতি তার অপরূপ রূপ
সকলের কাছে মেলে ধরে।

কোকিলের ডাক
শিমূল, পলাশের বাহার
আমাদের সকলকে মুগ্ধ করে।

শীতের রুক্ষতাকে ঝেরে ফেলে
বসন্তে প্রকৃতি নবরূপে সাজে
চারিদিকে আনন্দের হিল্লোল বাজে।

আমের মুকুল আসে এই সময়েতে
দোল উৎসব হয় এই মাসেতে।
বসন্তের মনোমুগ্ধকর আবহাওয়া
প্রাণ দেয় জুড়িয়ে।

নানারঙের উৎসবে ও ঘটনাতে
বসন্ত দোলা দেয় হৃদয়েতে।

চলুন জেনে নেই কবিতা সমগ্র সম্পর্কে

কবিতা সমগ্র কি?

অন্যবাংলার সাহিত্য বিভাগের নতুন সংযোজন এই কবিতা সমগ্র। এর মাধ্যমে একটি লিংকের মধ্যেই আপনারা পেয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন রকমের কবিতা। যা পাঠকের মনের খোরাক বাড়াবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

কেন এই কবিতা সমগ্র?

কবিতা সমগ্র প্রকাশের মূল লক্ষ্য হলো পাঠকদের বিভিন্ন ধরনের কবিতার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া যাতে একঘেয়েমি না লাগে। নানান রকমের কবিতার সংমিশ্রণ পাঠকের হৃদয় আন্দোলিত করে তুলবে।

আমি কিভাবে কবিতা সমগ্রে লিখব?

কবিতা সমগ্রে লেখার জন্য নিচে লেখা পাঠান ছবিতে ক্লিক করুন অথবা এই লিংকে “কবিতা সমগ্রে লিখুন” ক্লিক করুন। নিয়মাবলি ও ঠিকানা পেয়ে যাবেন।

কবিতা সমগ্র কবে প্রকাশিত হয়

কবিতা সমগ্র প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।

অন্যবাংলা অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

আরো পড়ুন

হারানোর পথে পাখির কলকাকলি
ছোট গল্প: মায়ের চিঠি
দেশলাইয়ের বাক্স
ধারাবাহিক গল্প মামলাণু (১ম পর্ব)
ধারাবাহিক গল্প মামলাণু ২য় পর্ব
ধারাবাহিক গল্প মামলাণু শেষ পর্ব
চিত্তরঞ্জন দেবভূতি এর শীতের কবিতা
রাজযোটক - সুমিতা চৌধুরীর গল্প
সুশান্ত সেন এর কবিতা মালভূমি, একদিন ও অস্থির
মুস্তাক আহমেদ এর মধ্যবিত্ত শিরোনামে কবিতা
টিনটিনের কৌটো
কবিতা সমগ্র ১
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৩ নিয়ে অন্যবাংলা’র বিশেষ সংখ্যা
অণুগল্প পেত্নির সঙ্গে প্রেম
সাপ্তাহিক কবিতা সমগ্র ২

আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হন
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হন
আমাদের ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হন
আমাদের ফেসবুক পেজ এ যুক্ত হন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল এ যুক্ত হন

Leave a Comment