পেত্নির সঙ্গে প্রেম
অন্যবাংলায় আজকে প্রকাশিত হলো শংকর ব্রহ্ম এর পেত্নির সঙ্গে প্রেম শিরোনামে ১ টি চমৎকার অণুগল্প। আপনারা এই পেত্নির সঙ্গে প্রেম অণুগল্পটি পড়ুন ও আপনাদের মতামত জানান।
পেত্নির সঙ্গে প্রেম শংকর ব্রহ্ম
বললে আপনারা কেউ বিশ্বাস করবেন না জানি, তবু বলি। কারণ বলার লোভ সংবরণ করতে পারছি না।
এ’বছরই ২রা মার্চ আমার পরিচয় হয় সুনীতা রায়ের সঙ্গে। ওই দিন আমার জন্মদিন ছিল। অনেকেই সেদিন আমাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছিল, সুনীতা তাদের একজন। আমার বন্ধুলিষ্টে তার নাম ছিল না দেখে সেদিনই তাকে বন্ধুত্বের রিকোয়েষ্ট পাঠাই। সঙ্গে সঙ্গে সে গ্রহণ করে। তারপর দু’চারদিনের মধ্যে শুভেচ্ছার পালা বিনিময় শেষ করে আমরা দ্রুত অন্তরঙ্গ হয়ে পড়ি। তারপর কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের অন্তরঙ্গতা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, আমরা মেসেঞ্জারে নিয়মিত নিষিদ্ধ আলোচনায় জড়িয়ে পড়ি।
প্রথমদিকে একটু দ্বিধা দ্বন্দ আমার মধ্যে থাকলেও,অল্পদিনের মধ্যে সে জড়তা কেটে যায়। দুজনেই সাবলীল ভাবে আলোচনায় লিপ্ত হয়ে পড়ি। প্রতিদিন রাত বারটার পর, সে আসত। রগরগে আলোচনায় রাত ফুরিয়ে ভোর হয়ে যেত। ইতিমধ্যে আসানসোল থেকে রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষে এক সাহিত্য সন্মেলনে আমার আমন্ত্রণ আসে। সুনীতাও আসানসোল থাকে। ভাবি, সন্মেলন শেষ হলে তার সঙ্গে একবার দেখা করব। সেই মতো তাকে জানাই, আমি আসানসোল যাচ্ছি। সে খুশি হয়ে, জানায়,তাহলে আর মুখে আলোচনা নয় শুধু, বাস্তবে আমরা লিপ্ত হচ্ছি এবারে। আমি সংকোচে তার কোন উত্তর দিতে পারি না।
৯ই মে কলকাতা থেকে ট্রেনে করে গিয়ে হাজির হই ওই সম্মেলনে। অনুষ্ঠান শেষে, একটা ট্যাক্সি নিয়ে ওর দেওয়া বাড়ির ঠিকানার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি। রাত দশটা পর সেখানে গিয়ে হাজির হই। ঠিকানা মিলিয়ে দরজায় কড়া নাড়তেই, কিছুক্ষণ পর এক বৃদ্ধ খকখক করে কাসতে কাসতে বেরিয়ে এসে বললেন, কাকে চাই? আমি সুনীতার নাম বলতেই, তিনি যেন বিস্ময়ে আমার মুখের দিকে নিস্পলক তাকিয়ে থাকলেন কিছুক্ষণ।
আমি অস্বস্থি বোধ করি।
বলি, সুনীতা নেই?
– আপনি কোথা থেকে এসেছেন?
– কলকাতা থেকে ,আপনি সুনীতাকে একটু ডেকে দিন। বলুন, শংকর বাবু এসেছেন।
– কাকে ডাকব?
– সুনীতা।
– সে তো দু’মাস আগেই মারা গেছে,আপনি জানতেন না?
– কি করে মারা গেল?
– কুমারী মেয়ে, কাকে ভালবেসে পেটে তার বাচ্চা নিয়ে, তার কাছে প্রত্যাখাত হয়ে, লাইনে ঝাঁপ দিয়েছে।
এরপর আমি কি করে যে সেখান থেকে বাড়ি ফিরে এসেছিলাম, জানি না। কিছু মনে নেই। একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম। ফিরে এসে সকালে মেসেঞ্জার খুলে দেখি, তার সঙ্গে আমার সব কথপোকথনগুলো আশ্চর্যজনক ভাবে উবে গেছে। এমন কি বন্ধু লিষ্টেও তার নামটাও নেই। আমি আজও এর কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাইনি।
আরো পড়ুন হারানোর পথে পাখির কলকাকলি ছোট গল্প: মায়ের চিঠি দেশলাইয়ের বাক্স ধারাবাহিক গল্প মামলাণু (১ম পর্ব) ধারাবাহিক গল্প মামলাণু ২য় পর্ব ধারাবাহিক গল্প মামলাণু শেষ পর্ব চিত্তরঞ্জন দেবভূতি এর শীতের কবিতা রাজযোটক - সুমিতা চৌধুরীর গল্প সুশান্ত সেন এর কবিতা মালভূমি, একদিন ও অস্থির মুস্তাক আহমেদ এর মধ্যবিত্ত শিরোনামে কবিতা টিনটিনের কৌটো কবিতা সমগ্র ১ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৩ নিয়ে অন্যবাংলা’র বিশেষ সংখ্যা
আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজ এ যুক্ত হন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল এ যুক্ত হন