DRS কি ও কেন? বিপিএলে DRS কবে আসবে | best DRS

DRS কি? ও কেন? বিপিএলে DRS

DRS কি ও কেন?

আজ আমরা জানবো DRS কি ও কেন সেটা নিয়ে। DRS এর মানে হলো ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম। যা খেলার মাঠে বিভিন্ন জটিল সিদ্ধান্ত নিতে আম্পায়ারকে প্রযুক্তিগত সহায়তা করে। প্রযুক্তির ছোঁয়া থাকায় এখানে সিদ্ধান্ত হয় প্রায় শতভাগ সঠিক। DRS সর্বপ্রথম ব্যবহৃত হয় ২০০৮ সালে। তবে তখন এটি পরিচিত ছিলো UDRS নামে।
DRS কি ও কেন? বিপিএলে DRS কবে আসবে
DRS কি ও কেন? বিপিএলে DRS কবে আসবে

DRS বনাম BPL

DRS নিয়ে বর্তমানে আলোচনা বলা চলে তুঙ্গে। বিপিএলের অনেকগুলো আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে এটি একটা।
এটা নিয়ে রীতিমতো তর্ক বিতর্ক সত্য মিথ্যার ঝড় চলছে। যেটার অধিকাংশ অবদান খেলাযোগের। তারা মূল বিষয়কে টেনে না এনে শুধু শুধু হাইপ তুলে যাচ্ছে।

এটা নিয়ে সর্বপ্রথম তথ্যপূর্ন ভিডিও করে ইউটিউব চ্যানেল ‘On Field’ এর সামি ভাই। উনি আগে রেডিও ভূমিতে ধারাভাষ্য দিতেন এবং পরে যমুনা টিভিতে গিয়েছেন।

তো এরপর অনেকেই এটা নিয়ে কথা বলেছেন দেখলাম। তবে মূলধারার চ্যানেলগুলো থেকে তেমন কিছু আসে নি। তারা হাইপ তুলতেই ব্যস্ত!

তো যাই হোক এখন দেখা যাক এই DRS কি? আর কেনই এটা নিয়ে এত তর্ক বিতর্ক? আর কেন বিসিবি এটা আনতে ব্যর্থ?

DRS এ কি কি প্রযুক্তি আছে?

DRS প্রযুক্তি মোটা দাগে ৩ টা এলিমেন্টস এর উপর নির্ভর করে। এগুলো হলো Sniko, Hawk eye, Hot Spot। মূলত এই তিনটি প্রযুক্তি ই ব্যবহার করা হয় DRS এ। চলুন এখন বিস্তারিতভাবে জেনে নেই এই ৩টি প্রযুক্তি সম্পর্কে। নিচে এই ৩টি প্রযুক্তি নিয়ে বিস্তারিতভাবে লেখা হলো

Sniko কি ও কেন?

Sniko: এটি স্নিকো বা আল্ট্রাএজ নামেও পরিচিত। এটি মূলত স্ট্যাম্পে থাকে। আর এর কাজ হলো সাউন্ডওয়েভগুলো আলাদা করা। আর এ সাউন্ডওয়েভগুলো এনালাইসিস করে ব্যাকএন্ডে থাকা এক্সপার্ট মূলত ডিসিশন মেক করে। এটার উপর নির্ভর করেই মূলত বোঝা যায় যে বল ব্যাটে নাকি গ্লাভসে লেগেছে।

See also  আইফোন 15 এ বাটন থাকছে!

এটা আনতে সবমিলিয়ে দিনপ্রতি খরচ হলো ১০০০ ডলার বা ১ লক্ষ টাকা। যেটা আসলেই বিসিবির জন্য কোনো ব্যাপার না। কিন্তু এখানে কিছু পয়েন্ট আছে যেটার জন্য বিসিবি দায়ী আবার দায়ী না।

Hawk eye কি ও কেন?

Hawk eye: এটা মূলত গ্রাফিক্স এবং Ai ব্যবহার করে বলের গতিপথ আর সম্ভাবতা নির্ধারণ করে। এখানে বেশ কিছু ক্যামেরার সেটআপ আছে যা থেকে প্রাপ্ত ভিডিও এনালাইসিস করে গ্রাফিক্স আর Ai এর মিশেলে একটা ডিসিশন তৈরি করা হয়। ইম্প্যাক্ট ইনলাইন, পিচিং আউটসাইড, উইকেট হিটিং এসব এর এভারেজ করে মূলত অরিজিনাল ডিসিশন টা দেয়া হয়।

এককথায় বলা চলে এটা একটা বল ট্রাকিং পদ্ধতি। যেটা বল ট্রাক করে প্রেডিকশন দিয়ে ডিসিশন তৈরি করে।

এটা আগেরটার তুলনায় একটু ব্যয়বহুল তা হলো প্রতিদিন এটার জন্য খরচ হলো ৩০০০ ডলার বা ৩ লক্ষ টাকা। বিসিবির হিসেবে এটাও মোটেই কঠিন কিছু না।

Hot Spot কি ও কেন?

Hot Spot: এটা একটু এডভান্স লেভেলের জিনিস বলা চলে। এখানে ইনফ্রারেড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। ২০০৬ থেকে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকলেও মূল পরিবর্তন আসে ২০১২ সালে। তখন এটার আমূল পরিবর্তন করা হয় বলা চলে। এতে যুকৃত করা হয় SLX-Hawk থার্মাল ইমেজিং। এটা যুক।ত করার ফলে এটার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতাও বেশ বেড়ে যায়।

বর্তমানে এটা আরো উন্নত হয়েছে। সেই সাথে এটার পিছনে খরচও আকাশচুম্বি হয়েছে।

এটা আনলে প্রতিদিনের খরচ হলো ১০,০০০ ডলার থেকে ৬০০০ ডলার। মূলত ক্যামেরার সেটআপ ভেদে এটা নির্ধারন করা হয়। তো সেই হিসাবে দিন প্রতি খরচ আসে ১০ লক্ষ টাকার মতো। এটাও বেশ ব্যয়বহুল দেখে দেশীয় সিরিজ বা আইসিসির ইভেন্ট ব্যাতীত খুব একটা ব্যবহার করা হয় না। আইপিএল বা বিগব্যাশেও সাধারনত সবসময় এটা দেখা যায় না। এটার যেমন খরচও আছে তেমনি পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন জটিলতাও আছে সেই সাথে ক্রিটিকাল ডিসিশন ছাড়া খুব একটা ব্যবহারও করা হয় না। তাই লীগগুলোতে এটার প্রচলন খুব একটা নেই।

See also  হোয়াটসঅ্যাপে আসছে এডমিন রিভিউ ফিচার

DRS পদ্ধতির খরচ কত?

Sniko আনলে দিনপ্রতি খরচ ১০০০ ডলার। Hawk eye আনলে দিনপ্রতি খরচ ৩০০০ ডলার। আর Sniko & Hawk Eye একসাথে আনলে ৩.৫থেকে ৪০০০ ডলার এর মত লাগে। আর Hot Spot এর খরচ হলো ১০,০০০ ডলার থেকে ৬০০০ ডলার এর মত।

অর্থাৎ একটি ম্যাচে DRS ব্যবহার করতে হলে সবমিলিয়ে প্রযুক্তিগত খরচ লাগবে ১৪০০০- ১৬০০০ ডলার এর মত।

কেন বিসিবি DRS আনতে পারলো না? কেন বিসিবি DRS আনতে ব্যর্থ ?

এখন কথা হলো এই DRS কি এমন মহার্ঘ যা ১০০০ কোটির বিসিবির (ওদিন নট আউট নোমানে ১০০০ কোটি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পাপন সাহেব বলেছেন বাড়তে পারে) পক্ষে আনা সম্ভব হলো না। কেন বিসিবি DRS আনতে পারলো না?

DRS এর এই অপ্রতুলতার জন্য মোটা দাগে দায়ী বিসিবির অপরিকল্পনা। ঠিক সময়ে সিডিউল করলে যেমন DRS পাওয়া যেত তেমনি ভালো ভালো বিদেশী খেলোয়াড় ও পাওয়া যেত।

DRS সরবারহ করে কারা?

সারা বিশ্বে এই DRS সরবারহ করে ২ টি কোম্পানি হক আই আর ভার্চুয়াল আই। আর বর্তমানে যেমন লীগের চাপ তেমন বাইলেটেরাল সিরিজ তো আছেই। তো এজন্য এটার সার্ভিস পাওয়ার জন্য আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখতে হয়। যেটা বিসিবি করে নি!

DRS এর মূল সমস্যা হলো পর্যাপ্ত ইকুয়েপমেন্ট থাকলেও সেটা অপারেট করার লোক খুবই কম। আর এটার জন্য ই মূলত সমস্যা। যেসব দেশে নিয়মিত খেলা হয় সেসব দেশে DRS সেট প্রায় সারাবছরই থাকে। কিন্তু সমস্যা হলো এটা অপারেট করার মতো লোকবল পাওয়া যায় না।

DRS কোথায় কোথায় ব্যবহার করা হয়?

আন্তর্জাতিক ম্যাচে DRS নিয়ে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যার ফলে সকল ম্যাচেই DRS ব্যবহৃত হয়। তবে বিভিন্ন লীগে DRS নানাসময়ে ব্যবহৃত হয়। বিগব্যাশে অনেক আগে থেকেই DRS ব্যবহৃত হয়। তবে আইপিএলে DRS ব্যবহার করা হয় ২০১৮ সাল থেকে। এখানে মূলত Sniko & Hawk eye বেশি ব্যবহৃত হয়। বিশেষ ম্যাচ ছাড়া সাধারনত Hot Spot ব্যবহৃত হয় না।
আর BPL এ সর্বপ্রথম ব্যবহৃত হয় ২০১৯ সালে বিপিএলের ৬ষ্ঠ আসরে। আর ২০২৩ সালের বিপিএলে DRS ব্যবহৃত হবে এলিমিনেটর রাউন্ড থেকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন টি-টোয়েন্টি লিগ SAT-20 আর সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর টি-২০ লিগ ILT-20 এ এবার প্রথমবারের মত ব্যবহৃত হচ্ছে DRS।
এছাড়া ২০১৯-২০ মরশুমে BCCI পরীক্ষামূলকভাবে রণজি ট্রফির (Ranji Trophy) সেমিফাইনাল ও ফাইনালে হক-আই (Hawk-Eye) ও আল্ট্রাএজ (Ultra Edge) ছাড়া DRS চালু করেছিল।

See also  Ai ব্যবহার বন্ধ করলো স্যামসাং

তো এই ছিলো DRS নিয়ে বিস্তারিত তথ্য। আরো কিছু জানতে হলে কমেন্টবক্সে জানাতে পারেন

Leave a Comment